বৃত্তকে ৩৬০ ডিগ্রি ধরা হয় কেন?
ব্যাখ্যা-১: Month শব্দটি একটি বিশেষ্য এবং এর মধ্যকার mon অংশটি মূলত moon থেকে এসেছে অর্থাৎ চাঁদ থেকে। সপ্তাহের দিনেও একটা দিন রয়েছে Monday যার বাংলা সোমবার। "সোম" শব্দের অর্থ ও চাঁদ। তাই প্রাচীনকালের পন্ডিতেরা একটা মাস কে ৩০ দিন হিসেব করেছিলেন। অর্থাৎ যেহেতু একটি পূর্ণিমা থেকে আরেকটি পূর্ণিমা পেতে মোটামুটি ৩০ দিন লাগতো। তাই তারা এক মাসকে ৩০ দিন হিসেবে বিবেচনা করতো।
আবার একটা ঋতুকে আরেকবার দেখা পেতে এরকম ১২ মাস সময় লাগতো। যেহেতু প্রাচীনকালের মানুষদের বিশ্বাস ছিল,সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে তাই তারা ১২*৩০ অর্থাৎ ৩৬০ দিনকে পৃথিবীর কক্ষপথকে গোলাকার বিবেচনা করে বৃত্তকে ৩৬০ ডিগ্রি ধরা হয়। এবার গোলকটির ৩৬০ ভাগের ১ ভাগকে ১ ডিগ্রি ধরা হয়। তাই বৃত্তকে ৩৬০ ডিগ্রি ধরা হয়।
ব্যাখ্যা-২: ব্যাবিলনের মানুষরা ৬০ সংখ্যাটিকে সাধারণ সংখ্য হিসেবে বিবেচনা করত কারণ ৬০ সংখ্যাটি ২,৩,৪,৫,৬ দ্বারা বিভাজ্য। তারা একটি ত্রিভুজ তৈরি করল যার প্রতিটি বাহু সমান। তারা ঐ ত্রিভুজের প্রতিটা কোণকে তাদের সাধারণ সংখ্যা অর্থাৎ ৬০ ডিগ্রি হিসেবে বিবেচনা করল। তারা এভাবে মোট ৬ টি সমবাহু ত্রিভুজ গোলকরে যোগ করে দেখল এটা একটি বৃত্তাকার ধারণা তৈরি করে এবং কেন্দ্রে মোট ৬ টি কোণ সৃষ্টি করে অর্থাৎ ৬*৬০=৩৬০ ডিগ্রি উৎপন্ন করে। অর্থাৎ বৃত্তের কেন্দ্র মোট ৩৬০ ডিগ্রি।
অন্যভাবে বলা যায়,
বেবিলনিয়ানরা ৬০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি (sexagesimal) ব্যাবহার করত। তাই তারা একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধের সমান জ্যা কে সমান ষাট ভাগে ভাগ করেছিল। আর এই জ্যা এর দুই প্রান্ত বৃত্তের কেন্দ্রের সাথে সংযুক্ত করলে একটা সমবাহু ত্রিভুজ উতপন্ন হয়। একটি বৃত্তেকে সর্বোচ্চ এরুপ ৬টি পৃথক ত্রিভুজ আকৃতির অংশে ভাগ করা যায়। তাই ৬টি জ্যা পাওয়া যায়। আবার একেকটি জ্যা ৬০ ভাগে বিভক্ত একেক ভাগকে ১ ডিগ্রী মনে করলে একেকটি জ্যা ৬০ ডিগ্রী করে। তাই একটি বৃত্ত ৬ *৬০ = ৩৬০ ডিগ্রী।
No comments